Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

প্রেক্ষাপট

বিবর্তনের ইতিহাসঃ

দেশের উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ শহর রাজশাহী মহানগরী। ১৯৪৭ সাল থেকে রাজশাহী বিভাগের প্রশাসনিক কার্যক্রম এখান থেকে শুরু হয়। ফলে মহানগরী বিভাগীয় শহরের মর্যাদা লাভ করে। মূলত রেশম ও নীল ব্যবসাকে কেন্দ্র করেই রাজশাহী মহানগরীর উৎপত্তি ঘটে।

ইংরেজ শাসনামলে ১৮২৫ সালে জেলা শহর নাটোর থেকে রাজশাহীতে স্থানান্তরিত হয়। সরকার ও স্থানীয় জমিদারদের সহযোগিতায় এখানে গড়ে উঠতে থাকে শিক্ষা, চিকিৎসা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। ১৮২৮ সালে এখানে বোয়ালিয়া ইংলিশ স্কুল নামে প্রথম আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। অনেকে মনে করেন, এটাই বাংলাদেশের সর্ব প্রথম আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই এ মহানগরী ঐতিহ্যবাহী রেশম ও শিক্ষা নগরী হিসাবে খ্যাত।

১৮৭৬ সালের ১ এপ্রিল ভুবন মোহন পার্কের অভ্যন্তরে টিন সেডের দুটি কক্ষ রাজশাহী পৌরসভা (রামপুর-বোয়ালিয়া মিউনিসিপ্যালিটি) কার্যক্রম শুরু করে। পরে ভুবন মোহন পার্ক থেকে রাজশাহী কলেজের একটি বৃহৎ কক্ষে পৌরসভা দপ্তর স্থানান্তর করা হয়। রাজশাহী পৌরসভার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হর গোবিন্দ সেনকে প্রথম চেয়ারম্যান করে মোট ৭ সদস্য বিশিষ্ট প্রথম টাউন কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সকল সদস্যই ছিলেন সরকার মনোনীত। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট, মহকুমা প্রশাসক ও মেডিক্যাল অফিসার ছিলেন পদাধিকার বলে সদস্য। পরবর্তীতে পৌর নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়। চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান কমিশনারগণের ভোটে নির্বাচিত হতেন। বেশির ভাগ কমিশনারই করদাতার ভোটে নির্বাচিত হতেন। ১৮৮৪ সালের মিউনিসিপ্যালিটি এ্যাক্টের ৩নং ধারা মতে ২১ জন কমিশনারের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১৯২১ সালে সোনাদীঘির পাড়ে পৌর ভবন নির্মিত হলে রাজশাহী কলেজ থেকে পৌরসভা দপ্তর পৌর ভবনে স্থানান্তরিত হয়। পৌর সেবা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে ১৯৩০ সালে ৮টি পৌর কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটিগুলো পৃথকভাবে অর্থ, গণপূর্ত, আলো, পানি, পয়ঃপ্রণালী ও স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আপীল এবং রাজা পিএন রায় প্রতিষ্ঠিত সদর হাসপাতাল কার্যক্রম পরিচালনা করত। এক বছর মেয়াদে কমিটি গঠিত হতো এবং পৌর এলাকা ছিল ৭ টি ওয়ার্ডে বিভক্ত।

১৮৭৬ সালে পৌরসভার একটি মিউনিসিপ্যাল বোর্ডও গঠিত হয়। ১৯৫৯ সালে মৌলিক গণতন্ত্র আদেশের বিধান অনুযায়ী মিউনিসিপ্যাল বোর্ডই মিউনিসিপ্যাল কমিটি হিসাবে কাজ করে আসছিল।

১৯৫৮ সালের ৫ অক্টোবর তৎকালীন জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কে.এম.এস. রহমান সরকারী নির্দেশে মিউনিসিপ্যাল কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করেন। ১৯৭৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সরকারী কর্মকর্তাগণই প্রশাসকের ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালের ১৩ আগষ্ট প্রশাসক  নিয়োগের মাধ্যমে রাজশাহী পৌরসভা পৌর কর্পোরেশনে উন্নীত হয়। ১৯৮৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রশাসকের পরিবর্তে অত্র কর্পোরেশনের মেয়র নিযুক্ত হন।  ১৯৯০ সালের পৌর কর্পোরেশন সিটি কর্পোরেশনে পরিণত হয়। পৌরসভা সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হওয়ায় এর আয়তন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড সংখ্যা ৩০টি। ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল নির্বাচনে ১ জন মেয়র, ৩০টি ওয়ার্ডে ৩০ জন কমিশনার ও শুধু মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনে ১০ জন কমিশনার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন।

২০০৮ সালের সরকারী আইন অনুযায়ী কমিশনারদের পদবী কাউন্সিলর নামকরণ হয়। ২০০৮ সালের ৪ আগষ্ট সর্বশেষ নির্বাচনে পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী ১ জন মেয়র, ৩০জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ১০জন সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। নির্বাচিত মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও কাউন্সিলরবৃন্দ ২০০৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর শপথ বাক্য পাঠ করেন। ২০০৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ রেজাউন নবী দুদুর নিকট থেকে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ২০০৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সাধারণ সভার মাধ্যমে বর্তমান পরিষদের মেয়াদ ভিত্তিক কার্যক্রম শুরু হয়।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন প্রশাসনিক অঞ্চলে বিভক্ত নয়। কেন্দ্রীয়ভাবেই প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তবে ৩০ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ১০ জন সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর জন্য স্ব স্ব আসনে পৃথক পৃথক কার্যালয় আছে। এসব কার্যালয়ে জন্ম নিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ প্রদানসহ অন্যান্য কাজ পরিচালনা করা হয়।

১৯৯৫ সালের ১৩ নভেম্বর সরকারী অনুমোদনের প্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি নতুন নগরভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০০৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এ ভবনে যাবতীয় দাপ্তরিক কাজ শুরু হয়।